
হারিয়ে যাওয়া শিল্পের এক বৃদ্ধ কামারের সরাসরি সাক্ষাৎকার

শিল্পের পরিচয় ও ঐতিহ্য:
রাস্তার পাশে একটা ছোট্ট কামার দোকান। লোহা গরম করার আগুনে হঠাৎ ঝলসে উঠল অগ্নিশিখা, আর সাথে বাজল একটানা ঠুক ঠুক শব্দ। একসময় এই শব্দেই চলত গ্রামের জীবনচক্র—কৃষকের লাঙ্গল থেকে শুরু করে গৃহস্থের দা, কুড়াল—সবই তৈরি হতো কামারদের হাতে।
কামারশিল্প একটি প্রাচীন গ্রামীণ পেশা। কামাররা মূলত: কৃষিকাজের যন্ত্রপাতি বানাতেন—দা, কুড়াল, লাঙ্গলের ফাল, খুন্তি, ছুরি, গরুর নাক ছিদ্র করার ফালকাটি ইত্যাদি।
বর্তমান বাস্তবতা:
❓”বিগত ২০ বছরে প্রায় ৬৫% কামার পরিবার তাদের পৈতৃক পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছে” – হস্তশিল্প উন্নয়ন বোর্ডের (BAN-HDCB) একটি মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী।
মূল কারণ :
✅এখন বাজারে সস্তা চাইনিজ বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল যন্ত্রপাতির দাপট।
✅কামাররা যথার্থ মূল্য পান না।
✅পরবর্তী প্রজন্মের পরিবর্তিত অভিরুচি।
রাস্তার ধারে আগুন জ্বালিয়ে যারা বসে থাকেন, তারা আজ আর কল্পনাও করতে পারেন না যে, একসময় এই হাতগুলোই ছিল গ্রামের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় মানুষদের মধ্যে। ঠিক তেমনি করে “অন্তরে-আমরা” টিম এর অন্যতম বন্ধু গোবিন্দ বাগচি সহ অন্যান্য বন্ধুরা মিলে রাজবাড়ী জেলা গোয়ালন্দ মোড় নামক স্হানে নাম বলতে অনিচ্ছুক একজন ৭০ বছর বয়সী কামার বললেন, “আমরা আগুনের পাশে জীবন কাটাইছি, এখন আগুন আছে, কাম নেই।” তার এই ভারাক্রান্ত কষ্ট তোমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আমার এই চেষ্টা। কারন, কামাররা যথার্থ মূল্য পান না বিধায়, পরবর্তী প্রজন্ম দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছে এই কামার পাড়ার শিল্প হতে।
🌱 সমাধান ও ভবিষ্যত ভাবনা:
✔️হস্তশিল্প মেলা, সরকারি প্রশিক্ষণ ও অনুদান এই পেশাকে টিকিয়ে রাখতে পারে।
✔️ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কামারদের হস্তনির্মিত সামগ্রী বিক্রি করার উদ্যোগ নেওয়া যায়।
🧠 শেষ কথা:
“কামারশিল্প শুধু আগুন আর লোহার গল্প নয়—এটা আমাদের ঐতিহ্য এবং হারিয়ে যাওয়া সময়ের সাক্ষী! আধুনিক যন্ত্রের ভিড়ে এই শিল্পের কণ্ঠরোধ যাতে না হয়, সেজন্য আজ তাদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের টিমের দায়িত্ব।তাই ‘বিলুপ্ত শিল্পের খোঁজে’ শুধু অনুসন্ধান নয়, এটি একটি আহ্বান—শিকড়ের কাছে ফিরে যাওয়ার।
👉 “আপনি কি কখনো কামারপাড়ার এমন দৃশ্য দেখেছেন? আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন কমেন্টে!”
ধন্যবাদ।
হ্যাশট্যাগ :
#KamarShilpo #TraditionalCrafts #BangladeshHeritage #OntoreAmra #RuralArtisans
দিনে দিনে দা, কাঁচি,খুনতা,বঁটি,সাবল ইত্যাদি বানানো কামারের দল হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের দেশ থেকে। আমার একবার একটু সুযোগ হয়েছিল এদের সাথে কথা বলার। পরিশ্রম অনুযায়ী টাকা না পাওয়ায় অনেকেই এ পেশা পরিবর্তন করছেন। তাই ভবিষ্যতে এ পেশা নিয়ে শঙ্কা হয়। লেখক কে ধন্যবাদ।