আমার চোখে দেখা : জসীমউদ্দীনের বাড়ি যাওয়ার গল্প


আমি ও আমার বন্ধু গোবিন্দ বাগচী গত ৬ জুলাই,২০২৫ দিনটি ছিল রবিবার ও সরকারি ছুটির দিন। আমরা দু’জনে শহর থেকে অটো বাইকে করে ৪০ টাকা ভাড়া দিয়ে দু’জনে পল্লী কবির বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত আগের দিন-ই নিয়েছিলাম। কারণ,ঢাকা’র বেশকিছু ৮৪য়ান বন্ধু আমাদের পল্লী কবির বাড়ি পরিদর্শন করার ইচ্ছা পোষণ করেছে বিধায়, এজন্যই মূলত আমাদের যাওয়া। আর ওখানে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম, এই ভ্রমণ অভিজ্ঞতা আমার পাঠকদের সাথে শেয়ার করবো। প্রিয় পাঠকবৃন্দ আমার বিশ্বাস, এই দর্শনীয় স্থানটি পরিদর্শনের জন্য আপনারও আগ্রহ যোগাবে।
✅ পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ির বর্তমান অবস্থা
পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ি বর্তমানে একটি সংগ্রহশালা ও দর্শনীয় স্থান। এখানে কবির ব্যবহৃত জিনিসপত্র, প্রিয় বই ও তাঁর স্মৃতি- বিজরিত নানা বস্তু সংরক্ষিত আছে। বাড়ির চারপাশে আছে সাজানো পরিবেশ। বিশেষ করে কবির পারিবারিক কবরস্থানটি চমৎকার করে বাঁধানো, যা আজও মানুষকে স্মরণ করিয়ে দেয়, কবির সেই বিখ্যাত “কবর” কবিতাটি। পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ির আঙিনায় মোট তিনটি কবর রয়েছে : ✔️ পল্লী কবি জসীমউদ্দীন ✔️ মমিনন নেছা (স্ত্রী) ✔️ আমিনা খাতুন (মা)। অনেকে ভুল করে তাকে “দাদী”বলে উল্লেখ করে থাকেন। বর্তমানে কবির মূলত: দুইটি পুরাতন ঘর আছে। যা কবির শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতি বিজড়িত। এগুলো এখন দর্শকদের জন্য সংরক্ষিত আছে। ১.কবির শোবার ঘর। যেখানে তিনি বিশ্রাম করতেন।২.আতিথ্য কক্ষ। অর্থাৎ একক্ষে তিনি অতিথিদের বসতে দিতেন। এগুলো মাটির দেয়াল ও টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি, যা এখনো সংরক্ষিত রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য। এই ঘরগুলোতে কবির ব্যবহৃত জিনিসপত্র সংরক্ষণ করা আছে, যা দর্শনার্থীদের পূর্বের স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। এছাড়াও নতুন রূপে সরকারি অর্থায়নে পল্লী কবির বাড়ির পেছনে নতুন একটি মিউজিয়াম বা সংগ্রহশালা নির্মিত হয়েছে।কবির পৈত্রিক বাড়িতে প্রবেশের জন্য প্রত্যেক দর্শনার্থী প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। আবার, সংগ্রহশালা বা মিউজিয়ামে ঢুকতে হলে সেখানেও প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। অর্থাৎ দুইটা’র জন্যই আলাদা আলাদা টিকিট ক্রয় করতে হবে। তবে মিউজিয়ামটি সরকারি ছুটির দিন বন্ধ থাকে।
✅ বাড়ির ভেতরে কী কী দেখলাম?





• কবির ব্যবহৃত আসবাবপত্র • হাতের লেখা পাণ্ডুলিপি • পুরনো ছবি ও স্মৃতিচিহ্ন • ঘরের কাঠামো (চারটি টিনের চালা ঘর)
✅বাড়ির আশেপাশের পরিবেশ কেমন? পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ির আশেপাশের পরিবেশ এখনো শান্ত ও সবুজে ঘেরা।খোলা মাঠ, গাছপালা আর পাখির ডাক মিলে তৈরি হয়েছে এক স্নিগ্ধ গ্রামীণ পরিবেশ।এখানে আসলে সহজেই কবির কবিতার গ্রামবাংলার ছোঁয়া পাওয়া যায়। দর্শনার্থীরা গেলে এখানকার শান্ত পরিবেশে কবির ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ বা ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’ এর দৃশ্য যেন মনে পড়ে যায়। সার্বিকভাবে, বাড়ির চারপাশ এখনো অনেকটাই নিরিবিলি, সবুজ আর ঐতিহ্যবাহী কুমার নদ।

✅ দর্শনার্থীদের জন্য ভ্রমণ টিপস • সাধারণ মানুষ ফরিদপুর জেলা বাস স্ট্যান্ড এসে, আমার মত অটো বাইক ভাড়া করে যেতে পারবে। দূরত্ব মাত্র দুই কিলোমিটার। খরচের কথা তো আমি পূর্বেই বলেছি। • 🗺️ গুগল ম্যাপ লিংকGoogle ম্যাপ: Jasimuddin’s House, Gobindpur, Faridpur • কোন মৌসুমে যাবার পরামর্শ : শরৎ ও শীতকাল (সেপ্টেম্বর–ফেব্রুয়ারি) ই সবচেয়ে উপযুক্ত।এই সময়েই প্রকৃতি যেমন সুন্দর, তেমনই ভ্রমণও আরামদায়ক। ✅ বাড়ির আশেপাশে আরও কী কী দেখা যায়?আশেপাশে ছোট বাজার ও কুমার নদ রয়েছে,যা একটি দর্শনীয় স্থান।খাবার বা থাকার জায়গা নাই বললেই চলে। ✅ কবি জসীমউদ্দীনের জন্মদিনে মেলা ও অনুষ্ঠান হয় কিনা? প্রতি বছর ১ জানুয়ারিতে কবির বাড়ির সামনে “কুমার নদ” ঘেঁষে একটি বড় ধরনের মেলা অনুষ্ঠিত হয়। ✅ আমার ৮৪য়ান বন্ধুদের অভিমত ও অনুভূতি: “আসমানীরে দেখতে যদি তোমরা সবে চাও, রহিমউদ্দিনের ছোট্ট বাড়ি রসুলপুরে যাও “—এই কবিতার লেখার বাড়িটি আমরা প্রায় ৩০+ জন বন্ধু দেখে নিলাম এবং সেই সাথে বন্ধুরা মিলে একটি গানের অনুষ্ঠানও স্বল্প সময়ে সম্পন্ন করলাম। তাই, এই স্বল্প সময়ে আমি সহ বন্ধুরা মিলে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলাম, তা সকল বন্ধুদের মনে রাখার মত।

✅অন্যদের জন্য বার্তা :“এই বাড়ি শুধু কবির নয়, গ্রামবাংলার প্রাণ। আসুন, স্মৃতি আর প্রকৃতির এই শান্ত কোণটিকে ভালোবাসি ও সম্মান করি।”
✅ শেষ কথা: আপনার মতামত শেয়ার করুন! “আপনিও কি পল্লী কবির বাড়ি ঘুরেছেন?আপনার অভিজ্ঞতা কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।”
—✅ SEO Keywords— #পল্লী কবি জসীমউদ্দীনের বাড়ি#ফরিদপুর ভ্রমণ#জসীমউদ্দীনের সাহিত্য#নকশী কাঁথার মাঠ#সোজন বাদিয়ার ঘাট#জসীমউদ্দীনের কবরস্থান, ফরিদপুর” ✅ Bonus Tip: • ভ্রমণের আগে আবহাওয়ার খবর নিন। • পরিবারের সাথে গেলে সময় নিয়ে ঘুরুন। • পরিবেশ পরিষ্কার রাখুন।
চমৎকার ব্লগার বন্ধুর বর্ননায় মনে হচ্ছে আবার পল্লী কবির বাড়ি চলে যাই। বন্ধুরা তোমরা যে যে ইচ্ছুক তারাতাড়ি প্লান করে চলে আসো পল্লী কবির বাড়িতে।
আমি বা আমরা যেটা চাচ্ছি, তোমরা কমেন্ট কর, শেয়ার কর।ধন্যবাদ।
শিল্পী তপন সাহা। এখন লেখক তপন সাহা। অনেক গুনে অধিকারী।
ধন্যবাদ শ্যামলকে, তার সুন্দর কমেন্ট করার জন্য।